ষষ্ঠ শ্রেণি
আমাদের পৃথিবী
চতুর্থ অধ্যায়
পৃথিবীর আবর্তন
প্রশ্ন: সূর্যের দৈনিক আপাত গতি কাকে বলে?
উত্তর: প্রত্যেকদিন সূর্যকে আমরা পূর্ব দিকে উঠতে দেখি। সারাদিন আকাশ পরিক্রমা করে শেষে বিকেলবেলা পশ্চিম দিকে সূর্য অস্ত যায়। আসলে সূর্যের সামনে পৃথিবী নিজের অক্ষরেখায় দিকে পশ্চিম থেকে পূর্বে পাক খায়। তাই সূর্যকে উল্টো দিকে সরে যেতে দেখা যায়। সূর্যের এরকম চলাচলকে সূর্যের দৈনিক আপাত গতি বলে।
প্রশ্ন: পৃথিবীর আবর্তন গতি কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবীর কক্ষতল এর সঙ্গে সাড়ে 66 ডিগ্রী কোণ করে হেলে, অক্ষরের চারিদিকে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অবিরামভাবে পাক খাচ্ছে। এটাই পৃথিবীর আবর্তন গতি।
প্রশ্ন: কোথায় পৃথিবীর আবর্তনের বেগ সবচেয়ে কম?
উত্তর: দুই মেরু অঞ্চলে।
প্রশ্ন: সূর্য বা অন্য তারা কেন পুব আকাশে আগে দেখা যায়?
উত্তর: মনে করো, তুমি নাগরদোলায় চড়েছ। কোন বন্ধু নিচে দাঁড়িয়ে তোমাকে হাত নাড়ছে। নাগরদোলা ঘুরছে-তুমি প্রথমে বাড়ি, তারপর গাছ, তারপর আকাশ দেখতে পেলে। তারপর ঘুরে এসে আকাশ থেকে গাছ, গাছ থেকে বাড়ি, আবার বন্ধুকে দেখতে পেলে। এভাবে যত বারই নাগরদোলা ঘুরে আসছে তুমি পরপর জিনিস গুলো দেখতে পাচ্ছ কেন? নাগরদোলা টা ঘুরছে বলেই তো! পৃথিবীও যেহুতু পশ্চিম থেকে পূর্বে পাক খাচ্ছে, তাই সূর্য, তারা পুব আকাশে আগে দেখা যায়।
প্রশ্ন: দিনও রাত্রি কিভাবে সংঘটিত হয়?
উত্তর: একটা অন্ধকার ঘরে গ্লোবের অপর টর্চের আলো ফেলে দেখো গ্লোবের অর্ধেক অংশ আলোয় আর বাকি অর্ধেক অন্ধকারে আছে। গ্লোবটা প্রসেন থেকে পূর্বে অর্থাৎ বাম দিক থেকে ডান দিকে ঘুরালে দেখবে অন্ধকারে থাকার জায়গা গুলো আলোয় আসছে। আবার আলোকিত অংশ অন্ধকারে চলে যাচ্ছে। গোলাকার পৃথিবীর যে দিকটা সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে, সেদিকে হয় দিন। উল্টো দিকটায় রাত।
প্রশ্ন: ছায়া বৃত্ত কাকে বলে?
উত্তর: অন্ধকার ঘরে টর্চের আলোয় গ্লোবকে ধীরে ধীরে ঘুরিয়ে দেখো-আনোয়ার অন্ধকারের মাঝে একটা স্পষ্ট সীমারেখা দেখতে পাবে। ওই সীমানা বরাবর যে বৃত্ত রেখার তৈরি হয়, তাহলো ছায়া বৃত্ত।
প্রশ্ন: ঊষা ও গোধূলি কাকে বলে?
উত্তর: ভোরবেলা ঘুম ভাঙলে দেখবে সূর্যোদয়ের আগে আকাশে হালকা আলো আভা দেখা যায়। বিকেলে দেখবে সূর্য ডোবার পর কিছুক্ষণ দিনের আলো থাকে। আলু থেকে অন্ধকার অন্ধকার থেকে আলোয় আসতে কিছু সময় লাগে। ছায়া বৃত্ত পৃথিবী পৃষ্ঠের যে জায়গার ওপর দিয়ে যখন যায় তখন সেখানকার আকাশে সূর্যকে দেখা যায় না। কিন্তু সূর্যের আভা দেখা যায়। সূর্যোদয়ের আগে সময় হলো ঊষা আর সূর্যাস্তের পর, সন্ধ্যের আগে সময় হল গোধূলি।
প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা বলতে কী বোঝো?
উত্তর: পূর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে যেতে থাকলে, সময় ক্রমশ পিছিয়ে যাবে। অর্থাৎ একই দিনের আগের সময়ে পৌঁছে যাবে। আর পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে যেতে থাকলে সময় এগিয়ে যাবে।
এসব সমস্যা সমাধানের জন্য মূল মধ্যরেখার ঠিক বিপরীত দিকে 180° দ্রাঘিমা রেখার অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা ঠিক করা হয়েছে। এখান থেকেই শুরু হয় নতুন তারিখ। ২৪ ঘন্টা পরে সেই তারিখ ঘুরে এসে আবার এখানে এসে শেষ হয়। জাহাজ বা প্লেনে করে এই রেখা পেরিয়ে পশ্চিম গোলার্ধে গেলে একদিন কমিয়ে নিতে হয়। আবাহন পূর্ব গোলার্ধে গেলে একদিন বাড়িয়ে নিতে হয়। এক্ষেত্রে কিন্তু সময়ের কোনো পরিবর্তন হয় না। অর্থাৎ তোমার ঘড়িতে যদি তখন বিকেল চারটে বাজে, তাহলে তারিখ রেখা পার হবার ঠিক পরে বিকেল চারটেয় থাকবে। শুধু পাল্টে যাবে তারিখটা!
প্রশ্ন: স্থানীয় সময় কাকে বলে?
উত্তর: কোন দ্রাঘিমা রেখায় মাথার ওপর যখন সূর্য আসে, তখন ঐ দ্রাঘিমা রেখায় অবস্থিত প্রত্যেকটি জায়গায় সময়ই হয় দুপুর 12 টা। সে কারণে দ্রাঘিমা রেখা কে Meridian বলে।Meridian একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ Midday মধ্যাহ্ন।মধ্যাহ্ন বা দুপুর 12 টা থেকে যে সময় গণনা করা হয় তা হল কোন স্থানের স্থানীয় সময়। দ্রাঘিমার বদলে গেলে স্থানীয় সময় বদলে যায়।
প্রশ্ন: প্রমাণ সময় কাকে বলে?
উত্তর: একটা দেশে রেল চলাচল এবং অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটাই সময় না থাকলে অসুবিধা হয়। তাই দেশের মাঝখানে কোন দ্রাঘিমা রেখার স্থানীয় সময় কে সারাদেশের প্রমাণ সময় বলে ধরে নেওয়া হয়।
প্রশ্ন: টীকা লেখ:-AM ও PM
উত্তর: বেশিরভাগ রেলস্টেশনে বা এয়ারপোর্টের 24 ঘন্টার ঘড়ি ব্যবহার করা হয়। তাতে রাত তিনটে দেখানো হয় 3:00hrs. আর দুপুর ৩টে 15:00hrs.। দুপুর 12 টা কে 12:00hrs. ও রাত ১২টা কে 00:00hrs. দেখানো হয়। রাত ১২ টা থেকে দুপুর ১২ তার আগে পর্যন্ত সময়কেa.m. আর দুপুর ১২ টা থেকে রাত ১২টার আগে পর্যন্ত সময়কেp.m হিসাবে ধরা হয়। সুতরাং 3p.m. বললে দুপুর ৩টে কে বোঝায়।
Post a Comment
0 Comments